চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধিঃ চাঁপাইনবাবগঞ্জে শীতের তীব্রতা বেড়ে যাওয়ায় অসুস্থ হয়ে পড়ছে অনেকে। বেড়েছে ডায়রিয়াসহ ঠান্ডাজনিত বিভিন্ন রোগ। শিশুসহ বৃদ্ধরা আক্রান্ত হচ্ছে বেশি। জেলার হাসপাতালগুলোয় শিশু ও বৃদ্ধরাই ভর্তি হচ্ছে বেশি।হাসপাতাল সূত্র জানায়, ঠান্ডাজিনত কারণে শিশুদের ডায়রিয়া, বয়স্কদের শ্বাসকষ্ট ও হৃদরোগ দেখা দিয়েছে। ডায়রিয়া ও নিউমোনিয়ায় শিশুরাই বেশি আক্রান্ত হচ্ছে এবং বৃদ্ধরা শ্বাসকষ্ট নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন। এছাড়া প্রচন্ড ঠান্ডায় অনেকেই হৃদরোগেও আক্রান্ত হচ্ছেন।এমনটাই জানিয়েছেন ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক ডা. নাজির আহমেদ।অন্যদিকে আমাদের গোমস্তাপুর প্রতিনিধি আল-মামুন বিশ্বাস জানান, সোমবার বেলা ১১টার দিকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ঘুরে জরুরি ও বহির্বিভাগে লাইনে দাঁড়িয়ে অনেক রোগীকে চিকিৎসা নিতে দেখা গেছে। ডায়রিয়া, জ্বর, সর্দি, কাশি, নিউমোনিয়া, অ্যাজমা, শ্বাসতন্ত্রের প্রদাহের রোগীর সংখ্যা বেশি।এদিকে ভাইরাসজনিত এই রোগে আক্রান্ত রোগীদের নানা পরামর্শ দিতে দেখা গেছে চিকিৎসকদের। ডায়রিয়াসহ ঠান্ডাজনিত ৩৪ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে বলে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আব্দুল হামিদ জানিয়েছেন। এছাড়া চৌডালা এলাকার ভর্তিকৃত এক শিশুর মা ইসমোতারা বলেন, দুই দিন থেকে হাসপাতালে মেয়েকে নিয়ে আছি। তার মেয়ের ঠান্ডা লেগে ডায়েরিয়া হয়েছিল, শরীরের অবস্থা ভালো ছিল না। ভর্তি হওয়ার পর চিকিৎসা নিয়ে মোটামুটি এখন ভালো আছে। পুরোপুরি সুস্থ হলে মেয়েকে নিয়ে বাড়ি ফিরবেন বলে তিনি জানান।গোমস্তাপুর ইউনিয়নের আরেক শিশুর মা সাবিনা বলেন, তার শিশু সন্তানকে নিয়ে গত বৃহস্পতিবার হাসপাতালে এসে চিকিৎসা নিচ্ছেন। শ্বাসকষ্টসহ পাতলা পায়খানা হচ্ছিল। চিন্তিত হয়ে পড়েছিলাম। এখন ধীরে ধীরে সে সুস্থ হয়ে উঠছে।বহির্বিভাগে চিকিৎসা নিতে আসা বৃদ্ধ আনসারুল ইসলাম বলেন, কয়েকদিন থেকে শীত বৃদ্ধি পাওয়ায় তার ঠান্ডা লেগেছে। হঠাৎ তার পেটের সমস্যা দেখা দেয়। সকাল থেকে তার পাঁচ-ছয়বার পায়খানা হয়েছে। সাথে তার শ্বাসকষ্ট হচ্ছে। চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি যাচ্ছি।গোমস্তাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আবাসিক চিকিৎসক ইসমাইল হোসেন লিংকন বলেন, ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে শিশুসহ বৃদ্ধরা। প্রতিদিন হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে আক্রান্ত রোগীরা। তবে ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যা বেশি। ভর্তিকৃত রোগীরা সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরছেন। তিনি পরিষ্কার পরিছন্ন, গরম পোশাক পরিধানসহ সকলকে স্বাস্থ্য সচেতনতা অবলম্বন করতে বলেন।গোমস্তাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা আব্দুল হামিদ বলেন, শীতকালীন ডায়রিয়াসহ অন্যান্য রোগে আক্রান্ত গোমস্তাপুর উপজেলায় সোমবার ৩৪ জন রোগী চিকিৎসা নিচ্ছেন। এর মধ্যে ১৪ জন ডায়রিয়া, পেটের পীড়ায় ১ জন, ৯ জন শ্বাসকষ্ট, অ্যাজমা ৫ জন, শ্বাসতন্ত্রের প্রদাহের ৪ জন রোগী রয়েছে। এছাড়া জরুরি ও বহির্বিভাগে প্রতিদিন বিভিন্ন রোগের ৪০০ জন রোগী চিকিৎসা নিচ্ছেন। রোগীদের স্বাস্থ্য শিক্ষার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। এদিকে সিভিল সার্জন ডা. এসএম মাহমুদুর রশিদ বলেন- প্রচন্ড এই ঠান্ডায় বয়স্কদের চলাফেরায় সাবধনতা অবলম্বন করতে হবে এবং শিশুদের বিশেষ যতœ নিতে হবে। এককথায় সবাইকে সাবধানে থাকতে হবে।#